পাঁচ কালেমা সমূহ
কালেমা সমূহ
১. কালেমা
তাইয়্যেবা (পবিত্র বাক্য )
উচ্চারণঃ
লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু মুহাম্মাদুর রাসূ-লুল্লা-হ ।
অর্থঃ একমাত্র
আল্লাহ্ তা’ আলা ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য বা মা’ বুদ নেই এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর
রাসূল বা প্ররিত পুরুষ ।
কালেমা ত্বাইয়েবার
অর্থ পবিত্র বাক্য, এ নাম দ্বারাই এ কালেমার পবিত্রতা ও মাহাত্ন্য সহজেই বুঝা যায় ।
এ কালেমাকে
দুটি অংশে ভাগ করা হয়েছে । প্রথম অংশে ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু’ আল্লাহ্ তা’ আলা ব্যতীত
অন্য কোন উপাস্য বা মা’ বুদ নেই । এ অংশটি চিরদিনের জন্য অপরিবর্তনীয় । আদি মানব হযরত
আদম ( আঃ) হতে শেষ পর্যন্ত যত নবী-রাসূল এ পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন,
তাঁরা প্রত্যেকে এ কালেমার দাওয়াত দিয়েছেন । ইবাদাতের যোগ্য অর্থাৎ মা’ বুদ সর্বকালের জন্য একজনই।
অতএব নবী-রাসূলগণের
উম্মতদিগের সকলের মূলমন্ত্র এ কালেমা লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু মুহাম্মাদুর রাসূ-লুল্লা-হ
। এ কালেমা কে যারাই মনে প্রানে জীবনের মূল মন্ত্র হিসেবে গ্রহন করেছে তারাই আল্লাহ্র
প্রকৃত ‘মু’মিন বান্দা । এ কালেমার দ্বারাই হাশরের ময়দানে বেহ্শতী ও দোযখীদের পার্থক্য
বুঝা যাবে ।
যে সমস্ত
লোক এ কালেমাকে জীবনের একমাত্র সাধনা বা মূলমন্ত্র সাব্যস্ত করে দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা
করবে তারাই দুনিয়া ও আখেরাতে সাফল্য লাভ করবে । আর যে সমস্ত লোক এ বুনিয়াদী মৌলবিষয়কে
অবিশ্বাস করবে তারা দুনিয়া ও আখেরাতে মুক্তির পরিবর্তে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে অর্থাৎ শেষ
পর্যন্ত জাহান্নামী হবে ।
এ কালেমার
দ্বিতীয় অংশ হল, “মুহাম্মাদুর রাসূ-লুল্লা-হ”। এ অংশ যুগে রেসালাতের মাধ্যমে পরিবর্তন
হয়েছে । যেমন হযরত আদম (আঃ)- এর জামানায় এ আংশ ছিল, ‘আদামু ছাফীয়ুল্লাহ’ । হযরত
নূহ নবী (আঃ)- এর জামানায় কালেমার এ আংশ ছিল, “নূহ নাবীয়ুল্লাহ”। হযরত ইব্রাহীম
(আঃ)- এর সময় এ আংশ ছিল,“ইব্রাহীমু খালিলুল্লাহ
।” হযরত ঈসা (আঃ) জামানায় ছিল “ঈসা রূহুল্লাহ” ।
অর্থাৎ যে
যুগে যিনি রাসূল বা পয়গাম্বার হতেন, তখন তার রিসালাতের স্বীকৃতি হিসেবে কালেমার শেষ
অংশে তাঁর পাক নামের উল্লেখ থাকত । আখেরী নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা ( সাঃ ) বিশ্ব
মানবের জন্য সর্বশেষ নবী বা রাসূল হিসেবে প্ররিত হয়েছিলেন, তাঁর পরে এ পৃথিবীতে আর
কোন নবী বা রাসূল প্রেরিত হবেন না । অতএব কালেমা ত্বাইয়্যেবার দ্বিতীয় অংশ ‘ মুহাম্মাদুর
রাসূলুল্লাহ’ কেযমত পর্যন্ত অপরিবর্তনীয় ।
২.কালেমা শাহাদাত ( সাক্ষ্য বাক্য )
উচ্চারণঃ-
আশ্হাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াদাহু লা-শারীকালাহু ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান
আবদুহু ওয়া রাসূলুহু ।
অর্থঃ- আমি
সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন মাবুদ নাই । তিনি এক, তার কোন শরীক ( অংশীদার )নাই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিতেছি
যে, হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) আল্লাহর বান্দা ও প্রেরিত রাসূল ।
৩.কালেমা
তাওহীদ (একত্ববাদ বাক্য )
উচ্চারণঃ-
লা-ইলাহা ইল্লা আনতা ওয়াহিদাল-লা ছানিয়া লাকা মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহি মুত্তাক্কিনা
ওয়া রাসুলু রাব্বিল আলামীন ।
অর্থঃ- তুমি
ছাড়া অন্য কেউ উপাসনার যোগ্য নেই । তুমি একক এবং তোমার সমকক্ষ কেউ নেই অ মুহাম্মদ
( সাঃ ) আল্লাহর রাসুল । তিনি মুত্তাক্বীগণের ইমাম এবং বিশ্ব প্রতিপালকের প্রেরিত পয়গাম্বর।
৪. কালেমা
তামজীদ ( গুণবাক্য )
উচ্চারণঃ-
লা-ইলাহা ইল্লা আনতা নূরাই ইয়াহদিয়াল্লাহু লিনূরিহী মাইয়্যাশাউ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহী
ইমামূল মুরসালীনা খাতামুন নাবিয়্যিন ।
অর্থঃ- তুমি
ছাড়া আর কেউ উপাসনার যোগ্য নেই তুমি যাকে ইচ্ছে নিজের জ্যোতি দ্বারা পথ প্রদর্শন কর
। আল্লাহর রাসুল মুহাম্মাদ ( সাঃ ) রাসুলগণের ইমাম এবং সর্বশেষ পয়গাম্বর ।
৫. কালেমা
রাদ্দে কুফর ও শেরেক
উচ্চারণঃ-
আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন আন উশরিকা বিকা শাইয়াও ওয়া নুমিনু বিহী ওয়াস্তাগফিরুকা
। মা আ’লামু বিহী ওয়া আতাবু ওয়া আমান্তু ওয়া আকলু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর
রাসুলুল্লাহ ।
অর্থঃ- হে
আল্লাহ ! আমি তোমার সাথে অন্য কাউকেও শরীক করা হতে এবং এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করা হতে
পানাহ চাচ্ছি । আমার জানা এবং অজানা সমুদয় বস্তু হতে তোমারই নিকট ক্ষমা প্রর্থনা করছি
; আর আমি তোমারই নিকট তাওবাহ করছি এবং তোমারই উপর ঈমান্ এনেছি এবং আমি এ কথাও বলছি
যে, আল্লাহ ব্যতীত আন্য কোন উপাস্য নেই এং হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) আল্লাহর রাসুল ।
No comments