সুন্দরবন যাবার উপায়
সুন্দরবন ভ্রমণ
Sundarban |
সপ্নময় দৃশ্য , মন জুড়ানো মনোরম প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যে সজ্জিত বাংলাদেশ ও উপকু্লের রক্ষাকবচ. বাংলাদেশের অক্সিজেন পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন।
এ বন সর্ম্পকে যত বলা হবে ততটাই কম মনে হবে ।ইউনেস্কো সুন্দরবনকে ৬ ডিসেম্বর ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষনা করে । যার স্থান ৭৯৮ তম ।
সুন্দরবন বাংলাদেশ ও ভারত এর মধ্য রয়েছে । ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে এর অংশ বেশি রয়েছে ।
এর মোট আংশ ( ১০,০০০) দশ হাজার বর্গ কিলোমিটার । যার মধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার তাহলে ভারতে রইল ৩,৯৮৩ বর্গ কিলোমিটার ।
উদ্ভদ ও প্রানীর গ্রন্থপঞ্জি বললেও ভুল হবে না সুন্দরবনকে ।
কি আছে এ বনে এ কথা মনে করতেই সর্ব প্রথম যার কথা মনে পড়বে আমাদের সে হল বিখ্যাত সর্ব মুখে খ্যাত শুধু টাইগার নয় রয়েল বেঙ্গল টাইগার । সুন্দর বনে গেলে সবাই বাঘের দর্শন করতে চাই । বাঘ দর্শন এর ভাগ্যে সবার কপালে জোটে না । বাঘ মামা দেখা দেই না সহজে অত ।পৃথিবীতে
অনেক বাঘ রয়েছে কিন্তু সবচেয়ে বিখ্যাত হল আমাদের রয়েল বেঙ্গল টাইগার মামা ।
সুন্দরবনে আরো রয়েছে চিত্রা হরিন,,বানর,কুমরি, কচ্ছব ,বনমরগ,ডলফিন ,অজগর সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সহ অনেক প্রজাতির প্রনী বাস করে সুন্দরবনে ।
নদী খাল ও খাড়ি দ্বারা বিভক্ত সুন্দরবন । ১,৮৭৪ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে সুন্দরবনে নদ-নদী খাল ও খাড়ি ।
সুন্দরবনে রয়েছে প্রচুর পরিমানে সুন্দরী,গেওয়া,কেওড়া এবং গরান গাছ । ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে ,মাছ রয়েছে ১২০ প্রজাতির,রয়েছে পাখি ২৭০ প্রজাতির ,আছে স্তন্যপায়ী ৩৫ প্রজাতির ,সরীসৃপ রয়েছে ৩৫ ও ৮ টি উভচর প্রজাতির বাসস্থল সুন্দর বন ।
রয়েছে যা দেখার সুন্দরবনেঃ
- Ø কাটকা বিচ
- Ø হীরণ পয়েন্ট
- Ø দুবলার চর
- Ø জামতলা সৈকত
- Ø মান্দারবাড়িয়া সৈকত
- Ø টাইগার পয়েন্ট
- Ø হাড়বাড়িয়া
- Ø ডিমের চর
- Ø করমজল
- Ø কচিখালী
- Ø সহ অরো অনেক কিছু
প্রচুর জ্ঞানের সমারহ রয়েছে এ বনে । বিশ্ব ও দেশীয় ভ্রমন পিপাসুরা যাবেন যে ভাবে সুন্দরবনে ।
কখন যাবেন
সুন্দর ভ্রমনের উত্তম সময় শীতকাল । অক্টোবর থেকে শুরু করে এপ্রিল মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সবথেকে বেশি পর্যটক খুরতে আসে সুন্দরবনে ।
আপনি চাইলে বছরের যে কোন সময় যেতে পারেন ।
যাবেন যেভাবে
v সুন্দরবন যেতে হলে প্রথমে যাইতে হবে আপনাকে খুলনা থেকে মংলা তারপর মংলাঘাট থেকে সুন্দরবন ।
ঢাকা থেকে বাস, লঞ্চ,ট্রেন, প্লেন এ যেতে পারেন আপনি খুলনা ।
প্লেনঃ যারা প্লেন এ যেতে চান তাদের যেতে হবে যশোর প্রথমে।সেখান থেকে যাবেন খুলনা।
যারা বাসে যেতে চানঃ ঢাকা থেকে খুলনার বাস এর সরাসরি ব্যবস্থা রয়েছে । এসি নন এসি দুই ধরনের বাস রয়েছে ।সোহাগ,হানিফ,ঈগল পরিবহনের বাস নিয়মিত ভোর ৬.০০ থেকে রাত্রি ১১.০০ টা পর্যন্ত খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে । খুলনা পৌছাতে সময় লাগে ঢাকা থেকে ৮ ঘন্টা ।
নন এসি ভাড়া- ৫৫০ টাকা। এসি ভাড়া-১৪০০ টাকা ।
বাসে ডাইরেক্ট মংলাঃ -ভোর ৬-৭ টার দিকে ঢাকার সায়েদাবাদ বাস স্টেশন থেকে মংলা যায় বাস। কাউন্টারে গিয়ে সুন্দরবন বা পর্যটন বাসে করে মংলায় আসুন । পাঁচ ঘন্টা সময় নিয়ে আপনাকে মংলা পশুর নদের পাড়ে নামিয়ে দিবে বাস ।
ট্রেনঃ ঢাকা থেকে সরাসরি খুলনার ট্রেনে যাওয়া যায় । SUNDARBAN EXPRESS (726) ঢাকা থেকে ছাঁড়ে সকাল ৮:১৫ মিনিট এ পৌছায় বৈকাল ৫:৪০ মিনিট এ সময় লাগেঃ ৯ঘন্টা ২৫ SUNDARBAN EXPRESS (726) ট্রেন বন্ধ থকে বুধবার দিন ।
CHITRA (764) ঢাকা থেকে ছাঁড়ে রাত ৭ টায় পৌছায় পরের দিন ভোর ৩:৪০ মিনিট এ । সময় লাগেঃ ৮ ঘন্টা ৪০ মিনিট CHITRA (764) ট্রেন সোমবার বন্ধ থাকে ।
ভাড়াঃ S_CHAIR: প্রাপ্ত বয়স্ক ৫০৫ টাকা শিশু ৩৩৫ টাকা ,SNIGDHA: প্রাপ্ত বয়স্ক ৯৯৬ টাকা,শিশু ৬৩৯ টাকা । AC_S: প্রাপ্ত বয়স্ক ১১৫৬ টাকা শিশু ৭৬৫ টাকা । AC_B: প্রাপ্ত বয়স্ক ১৭৮১ টাকা শিশু:১১৯৫ টাকা । ভ্যাটঃ২০টাকা ।(বাংলাদেশ রেলওয়ে সময়সূচী ও ভাড়া অনুযায়ী)
লঞ্চ: খুলনা যাবার জন্য বিভিন্ন কম্পানির লঞ্চ রেয়েছে ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ।
মংলা গাইড
খুলনা থেকে মংলাঃ সুন্দরবন দেখতে হলে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে খুলনা থেকে মংলা । খুলনা থেকে মংলা বাসে যাওয়ার জন্য ভাড়া ৮০-৯০ টাকা । প্রাইভেট কার ও ভাড়া পাওয়া যায় ।খুলনা থেকে মংলার ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ।
বাস থেকে নেমে রিক্সা বা অটোতে মংলা ঘাট এ যেতে হবে ।মংলা ঘাটে আসার পর ট্রলার কিংবা লঞ্চ নিয়ে দুই ঘন্টাই সুন্দরবনের করমজল ওহাড়বাড়িয়া যেতে পারেন ।
যাত্র পথে দেখবেন সুন্দরবনের গাছের সারি ।নদীতে দেখা মিলবে ডলভিন কিছুক্ষন পরপর । ভাটার বিষয়টা খেয়াল রাখতে হবে করমজল গেলে ।করমজল মূলত কুমির ও হরিনের প্রজনন কেন্দ্র । করমজল নেমে টিকিট কাটতে হবে বনে ঢোকার জন্য । টিকিট মূল্য প্রতি জন ২৩ টাকা ।
বিদেশিদের জন্য ৩০০ টাকা ।
ভাড়াঃ শুধু করমজল যাওয়া আসা মিলে ১০০০ টাকায় ট্রলার পেয়ে যাবেন । করমজল ও হাড়বাড়িয়া দুই পয়েন্টে গেলে ট্রলার ভাড়া একটু বেশি লাগবে ।
সুন্দরবন ভ্রমন ফিঃ সুন্দরবন ভ্রমনের জন্য ফি দিতে হয়।
ভ্রমন ফি তালিকাঃ
·
- অভয়ারণ্য এর বাহিরে জন্য জনপ্রতি ভ্রমন ফিঃ
দেশি পর্যটকদের জন্য-৭০ টাকা। বিদেশীদের জন্যঃ১০০০ টাকা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ২০ টাকা ।
- অভয়ারণ্য এলাকায় যাওয়ার জন্য জনপ্রতি ভ্রমন ফিঃ
দেশি পর্যটকদের জন্য-১৫০ টাকা। বিদেশীদের জন্যঃ১৫০০ টাকা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ৩০ টাকা ।
· করমজলে দেশি পর্যটকদের জন্য টিকিট মূল্য প্রতি জন ২৩ টাকা । বিদেশিদের জন্য ৩০০ টাকা ।
·
- অনান্য খরচের মধ্য রয়েছে বনবিভাগের ফি ছাড়াওঃ
প্রতিদিন গাইড ফি ৫০০ টাকা।নিরাপত্তা গার্ড ফি ৩০০ টাকা ।টেলিকমিউনিকেশন ফি ২০০ টাকা । ভিডিও ও ক্যামেরা দেশিদের জন্য ২০০ টাকা,বিদেশিদের জন্য ৩০০ টাকা ।
থাকবেন কোথায় সুন্দরবন দেখতে গিয়েঃ
হোটেলঃ থাকার জন্য উপযুক্ত ভাল কিছু হোটেল রয়েছে ।মংলায় থাকার ভাল হোটেল তেমন নেই ।তাই খুলনাতেই থাকায় অনেক ভাল । ব্যাপারটা আপনার পছন্দের উপর নির্ভর করে ।
রেস্টহাউজঃ বনভিভাগের রেস্টহাউজ রয়েছে সন্দরবনের অভয়ারণ্যের
· টাইগার পয়েন্টের কচিখালী । ভাড়াঃ দেশি পর্যটকদের কক্ষ প্রতি ৩০০০ টাকা।বিদেশিদের জন্য কক্ষ প্রতি দ্বিগুন ভাড়া ।
· হিরণ পয়েন্টের নীলকমল । ভাড়াঃ দেশি পর্যটকদের কক্ষ প্রতি ৩০০০ টাকা।বিদেশিদের জন্য কক্ষ প্রতি দ্বিগুন ভাড়া ।
· কটকায় । ভাড়াঃ দেশি পর্যটকদের কক্ষ প্রতি ২০০০ টাকা।দুই কক্ষ ৪০০০ টাকা। বিদেশিদের জন্য কক্ষ প্রতি দ্বিগুন ভাড়া ।
তাছাড়া সুন্দরবনের পাশে সাতক্ষীরা শহরে রেস্টহাউজ, সাধারণ মানের হটেল, রয়েছে ।
ট্যুর এজেন্সির মাধ্যমে গেলে খরচটা তুলনা মূলক অনেক কম হয় । হাতে তিন চার দিনের সময় থাকলে ট্যুর এজেন্সির মাধ্যমে যাওয়াটায় অনেক ভাল । এতে করে অনেক জায়গা আপনি ভাল করে দেখতে পারবেন ।
No comments